শাইলট্টি রাইগ্রাম উচ্চ বিদ্যলায়
সুখ-স্মৃতিময় অতীতকে নিয়ে ভাবতে মানুষ বড় বেশী ভালোবাসে। আর সে যদি হয় শৈশব-কৈশরের স্মৃতি বিজড়িত অতীত তাহলে তো আর কথাই থাকে না। প্রতিটি মানুষকেই প্রবলভাবে আকর্ষণ করে থাকে সে অতীত। বাস্তবিক অর্থে মানুষের জীবনের সেরা সুন্দর সময় হচ্ছে তার শৈশব-কৈশোর দিনগুলো।
আমিও এ থেকে ব্যতিক্রম নই। আমাকেও প্রবলভাবে আকর্ষণ করে থাকে আমার শৈশব-কৈশোরের সেই মধুমাখা স্মৃতি। মনে পড়ে আমার সেই স্কুল জীবনের হাসি-আনন্দভরা দিনগুলো। মনে পড়ে, আমার প্রিয় স্কুল ><শাইলট্টি রাইগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়<>এবং এ স্কুলের শিক্ষক ও সহপাঠীদের, যাদের সান্নিধ্যে কেটেছে আমার সেদিনের সেই রঙিন সময়। আজ আমার সেই প্রিয় স্কুল নিয়ে লিখতে বসে স্বভাবতই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছি।
স্কুলের গন্ডিতে পা রাখি যে শিক্ষকের হাত ধরে, তিনি মিজান স্যার।সেই শুরু হলো আমার স্কুল জীবন। আমার প্রথম ক্লাস টিচার ছিলেন তর্সকিন স্যার। উনি বাংলা পড়াতেন।  সেই সময় স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীরতে
আমি তেমন ভাল ছাত্র ছিলাম না। তবে  ক্লাস করতে ভালোই লাগতো আমার। খুব বেশি মনে পড়ে শামীমা ম্যাডামের কথা। উনি আমাদের বাংরা দ্বিতয় পত্র পড়াতেন। উনার কথা আমরা শুনতাম না। আর একারনে উনি সব সময় বলতো- নন সেন্সগুলা, তোদের কমন্সেন্স নাই। খুব মজা পেতাম উনার এই ডাইলগ শুনে। অনেক ভাল মানুষ ছিলেন উনি। মিজান স্যার ইংরেজি ক্লাসে মজার মজার গল্পগুলোর কথা মনে পড়লে এখনো মাঝে মাঝে একা একা হাসি। তবে উনি রেগে গেলে আর কারো রক্ষা ছিল না। উনি যেমন শাসন করতেন ঠিক তেমন আদরও করতেন।আর পরিক্ষিত  স্যার যখন ত্রিভুজ ও বৃত্ত অংকন করতেন তখন বোর্ড থেকে চোখ সরাতে মন চাইতো না। উনি এগুলো এমনভাবে হাত দিয়ে আঁকতেন মনে হত প্রতিটির মাপ সমান। আর উনার দর্পণ পড়ানোর সময় সেই চড়ুই পাখির গল্প সব কিছুই চোখের সামনে মাঝে মাঝে ভেসে উঠে।
মনে পড়ে স্কুলে বিএনসিসি করার চমৎকার সেই দিনগুলো।
মনে পড়ে আমার অসংখ্য খেলাধুলার স্মৃতি বিজরিত সেই স্কুল মাঠটির কথা। কতো খেলাধুলাই না করেছি সেই মাঠে। ইণ্টার স্কুলের খেলা, আন্তঃডিভিশন, স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া সব খেলাতেই আমি ছিলাম সক্রিয়। খুব বেশি মনে পড়ে ক্লাস নাইনের ‘এ’ সেকশন আর ‘বি’ সেকশনের ফুটবল ম্যাচের কথা। মনে পরে আমাদের গোল কিপার মজিবুর রহমান মহাসীনর কথা। সারাদিনই বলতে গেলে স্কুল আর মাঠই ছিলো আমার বিচরণ ক্ষেত্র।
আমাদের সে সময়ের ইমরান স্যারকে বেশ মনে পড়ে। ক্রীড়া শিক্ষক ছিলেন তিনি। । স্যার অনেক মজার মানুষ ছিলেন। তাঁর সাথে আমরা জেলা পর্যায়ের অনেক ক্রীড়ায় অংশ নিয়েছি। সেই সব দিনের অনেক স্মৃতিই আজ মনের পর্দায় ভেসে ওঠে। তখন আমরা পাঁচবিবি আর ছাতিনালী এ খেলতে গিয়েছিলাম।
আমাদের স্কুলের রেজাল্টও খুব ভালো হতো। স্কুলে শিক্ষার মান খুব ভাল ছিলো। ছাত্র সংখ্যাও ছিলো অনেক। প্রায় ২৮০ জনে   উপরে। এ স্কুলের সে অনেক ছাত্রই আজ সমাজে সু-প্রতিষ্ঠিত। অনেক স্বনামধন্য মানুষ এ স্কুলের ছাত্র ছিলেন।
 সেই স্কুলে আজও আমাকে টানে। মনটা কৈশোরে চলে যায়।বন্ধুদের আবার কাছে পেতে, ইচ্ছে করে, চুটিয়ে আড্ডা দিতে ইচ্ছে করে। অপ্রাসঙ্গিক-প্রাসঙ্গিক, শ্লীল-অশ্লীল- সব কৌতুকী কথার বানে আবার হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে

শত বছরের ঐতিহ্যবাহী শাইলট্টি রাইগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় কে নিয়ে আজও আমি অনুভব করি আমার ধমনীতে প্রবাহমান শিহরণকে। স্কুলের নাম শুনলেই হৃদয় নেচে ওঠে সুখ-স্মৃতি।আমার কৈশোরিক ভালবাসা আর আনন্দ-ঝগাড়ার মুখরিত পট শাইলট্টি রাইগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়